সরকারী-বেসরকারী সকল বিভাগেই পুরকৌশল সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ । সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং হলো একটি প্রাচীনতম প্রধান নিয়মানুবর্তি ইঞ্জিনিয়ারিং প্রথা । ১৭৪৭ সালে প্রথম ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপিত হয় ফ্রান্সে, যার নাম ”দি ন্যাশনাল স্কুল অব ব্রিজেস এন্ড হাইওয়েজ” । তখন একজন প্রকৃত ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে যাকে ডাকা হতো, তার নাম “ জন স্মিটন” ।
অর্থনৈতিক ও টেকসই উন্নয়নের জন্য ভৌত অবকাঠামো নির্মাণ ও রক্ষনাবেক্ষন করতে মাঠ পর্যায়ে যারা ব্যাপক কর্মকান্ডে সক্রিয়ভাবে অবদান রাখেন, তারাই সিভিল ইঞ্জিনিয়ার।
পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটটে সিভিল টেকনোলজিতে অধ্যয়নকালীন সময়ে দালানকোঠা, সড়ক, জনপথ, ব্রীজ, কালভার্ট, হাইড্রলিক, স্ট্রাকচার, স্যানিটেশন, পানি সরবরাহ ইত্যাদির জরিপ কাজ নির্মাণ কৌশল ও রক্ষনাবেক্ষন সম্পর্কে তাত্ত্বিক ও ব্যবহারিক জ্ঞান অর্জন করে।
সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং এর প্রধান শাখা চারটি- I. Structural Engineering, II. Transportation Engineering, III. Geo technical Engineering, IV. Environmental Engineering এছাড়া Water Resource Engineering কেও পুরকৌশলের একটা শাখা বলা যায় । সময়ের সাথে সাথে সিভিল ইঞ্জিনিয়ার এর গুরুত্ব বাড়ছে । বাংলাদেশের প্রায় সব পাবলিক ও প্রাইভেট প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার সুযোগ আছে ।
সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য
• পৃথিবীর সবচেয়ে পুরনো প্রকৌশলবিদ্যা হচ্ছে পুরকৌশল বিভাগ বা সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং। আমরা যে বসবাসের জন্য এবং নিজস্ব কাজের জন্য উঁচু উঁচু দালান নির্মাণ করি এবং চলাচলের জন্য ব্রিজ ব্যবহার করি সেগুলো তৈরি একজন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারের কাজ মূলত Structural Engineer এসব কাজের জন্য নিয়োজিত থাকে।
• যে রাস্তা দিয়ে আমরা যাতায়াত করি সেই রাস্তা নির্মাণ, রাস্তার উপর দিয়ে বিভিন্ন ধরনের গাড়ি চলাচলের নিরাপত্তা থেকে শুরু করে তাদের গতিবিদ্যা নিয়ে কাজ করা হয় এই প্রকৌশল বিভাগেTransportation Engineering এর মধ্যে পড়ে।
• মাটি বা সয়েল নিয়ে কাজ করা হয় এই বিভাগে। উঁচু উঁচু যে দালান নির্মাণ করা হয় সেগুলোর ভিত্তি থাকে মাটির নিচে। এই ভিত্তি হতে হয় মজবুত এবং ভারবাহী। এই ভিত্তি এমনভাবে তৈরি করতে হয় যেন ভূমিকম্প হলেও দালান মাটিতে বসে না যায় বা হেলে না পড়ে। এ বিষয় পড়ানো হয় Geotechinal Engineeringএর ভিতর।
• পরিবেশ প্রকৌশল (Environmental Engineering) নিয়ে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং এ খুবই গুরুত্বপূর্ণ কাজ হয়। এই বিষয়টিতে যেকোনো পরিবেশ দূষণের বিরুদ্ধে গবেষণা করা হয়। ঘরে ঘরে মানুষ যেন বিশুদ্ধ পানি পেতে পারে সেজন্য যে যে বিষয় পড়ানো উচিত তার সব কিছু পরিবেশবিদ্যার মধ্যে পড়ে। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আছে, যার নাম পানি সম্পদ প্রকৌশল বা Water Resource Engineering। বাঁধ তৈরি, বন্যা এবং খরা নিয়ন্ত্রণ, বিভিন্ন ঋতুতে ফসলের জন্য প্রয়োজনীয় পানি বণ্টন ইত্যাদি বিষয়বস্তু পড়ানো হয় এই বিভাগে।
• অবকাঠামো নির্মাণের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মৌলিক বিষয় হচ্ছে এর নির্মাণ খরচ। একবিংশ শতাব্দীর প্রকৌশলীদের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ হচ্ছে কীভাবে অবকাঠামোর বাইরের সৌন্দর্য বজায় রেখে জটিল জটিল ডিজাইন কম খরচে করা যায় সেটার উপায় বের করা। শুধু খরচ কম রাখলেই হবে না, কম খরচে ভালো কাঁচামাল ব্যবহার করে অনেক বেশি স্থায়িত্ব নিয়ে এই কাঠামো তৈরি করতে হবে। এই খরচের ভিতর কিন্তু আবার কাঠামো নির্মাণ করার পরবর্তী রক্ষণাবেক্ষণ এবং সংস্কার- এই দুটোর জন্য যে খরচ হবে সেটাও ধরতে হবে।
কর্মক্ষেত্র
• সড়ক ও জনপদ বিভাগ
• গণপূর্ত বিভাগ
• Real estate company
• নগর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ
• পরিবেশ নিয়ে কর্মরত বিভিন্ন multinational company
• দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর ও বিভিন্ন multinational NGO
• জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর
• রেলওয়ে Advertisements
• শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর
• এল.জি.ই.ডি
• এল. জি. ডি
• পানি উন্নয়ন বোর্ড
• ওয়াসা
• পিডিবি
• উয়াপদা
উচ্চ শিক্ষার সুযোগ
• B.Sc in Civil Engineering
• B.Sc in Architecture Engineering
• Water Resources Engineering
• B.Sc in Urban and Regional Planning
• B.Sc in Environmental Engineering
১। দেশে বিদ্যমান ইঞ্জিনিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়গুলো থেকে বিএসসি-ইন-ইঞ্জিনিয়ার ডিগ্রী অর্জনের যোগ্যতা অর্জন করবে।
২। বিভিন্ন বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএসসি-ইন-ইঞ্জিনিয়ার ডিগ্রী অর্জনের যোগ্যতা অর্জন করবে।
৩। ইঞ্জিনিয়ার ইন্সটিটিউট, রমনা, ঢাকা কর্তৃক পরিচালিত এএমআইই ডিগ্রী (বিএসসি-ইন-ইঞ্জিনিয়ার সমমান) অর্জন করতে পারবে।
৪। বিদেশের যেকোনো বিশ্ববিদ্যালয়/ইন্সটিটিউট থেকে উচ্চতর ডিগ্রী অর্জন করতে পারবে।
৫। আইডিইবি’র সদস্য হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করবে।