mawts

মানব জীবনকে সহজতর, আরামদায়ক, যুগোপযোগী, নির্ভরযোগ্য ও স্বাস্থ্য সম্মত করার লক্ষ্যে ধাতু ও ধাতব সামগ্রীর ব্যবহার যখন অতি মাত্রায় বেড়ে যায়, ঠিক তখনই প্রযুক্তি জগতে মেকানিক্যাল টেকনোলজির উদ্ভব ঘটে।
কাঠামো ছাড়া জীবদেহের অস্তিত্ব যেমন অকল্পনীয় তেমনি মেকানিক্যাল টেকনোলজি ছাড়া অন্য টেকেনালজির অস্তিত্ব অকল্পনীয়। প্রবাদে আছে, যেখানে চাকা ঘোরে সেখানেই মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারদের অবদান বিদ্যমান থাকে। বর্তমান সভ্যতার যুগে সকল আধুনিক যন্ত্রপাতি পরিচালনার জন্য মেকানিক্যাল টেকনোলজির অবদান অনসিকার্য এবং এর গুরুত্ব চিরকাল অব্যাহত থাকবে। শিশুর খেলার সামগ্রী থেকে শুরু করে নিত্য প্রয়োজনীয় গৃহস্থালী পন্য, আসবাব পত্র, তৈজষপত্র, কৃষি ও সেচ যন্ত্রপাতি, ইলেকট্রিক সামগ্রী, বিভিন্ন যানবাহনের বডি ও ইঞ্জিন, ক্ষেপনাস্ত্র, রোবট, কলকারখানার যন্ত্রপাতি ইত্যাদি ডিজাইন, নির্মাণ, মেরামত ও রক্ষনাবেক্ষন এ টেকনোলজির অন্যতম কাজ। খনি থেকে ধাতব ও অন্যান্য খনিজ উত্তোলন, প্রক্রিয়াকরন, বিভিন্ন ধাতুর উৎকর্ষ সাধন, তাপ চিকিৎসা ইত্যাদির মাধ্যমে ধাতবের উপযোগিতা বৃদ্ধিও এই টেকনোলজির কাজ। বর্তমানে প্লাষ্টিক, মেলামাইন, সিনথেটিক, কাঁচ, সিরামিক, প্রভৃতি ইঞ্জিনিয়ারিং সামগ্রি তৈরির ক্ষেত্রেও অসামান্য সাফল্য এসেছে এই টেকনোলজির স্পর্শে। শিল্প উদ্যোগ, শিল্পকারখানার স্থাপন ও ব্যবস্থাপনা, পণ্যের মান নিয়ন্ত্রণ এবং ক্রেতাদের চাহিদামত পন্য উৎপাদন এই টেকনোলজির আওতাভুক্ত। ক্ষুদে, মাঝারী ও ভারী শিল্পকারখানায় এই টেকনোলজির কর্মক্ষেত্র বিস্তৃত। আত্মকর্মসংস্তানের সুযোগও অবারিত।
একুশ শতকের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা এবং বর্তমান সরকারের রূপকল্প বাস্তবায়নে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারগণ ক্রমাগত ভাবেই অবদান রেখে চলেছে। বিপুল জনসংখ্যা অধ্যুষিত আমাদের এই ক্ষুদ্র বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে, জনসংখ্যাকে জনসম্পদে পরিণত করার লক্ষ্যে মেকানিক্যাল টেকনোলজির অবদান অপরিসীম

 

 

মেকানিক্যাল টেকনোলজির আর্থ সামাজিক অবস্থা
কারিগরি শিক্ষা বিভাগের অধীনে অনেক গুলো বিভাগ রয়েছে, তার মধ্যে মেকানিক্যাল বা যন্ত্রোকৌশল বিভাগ অন্যতম। মেকানিক্যাল বিভাগে তাত্ত্বিক জ্ঞানের পাশাপাশি ব্যবহারিক বা হাতে কলমে শিক্ষা দেওয়া হয়। মেকানিক্যাল বিভাগে ব্যবহারিক শিক্ষার মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন মেশিন যেমনঃ-লেদ মেশিন,শেপার মেশিন,মিলিং মেশিন,গ্রাইন্ডিং মেশিন,ওয়েল্ডিং মেশিন এছাড়া আরও অনেক ধরনের মেশিনের বাস্তব কাজের হাতে কলমে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।এই সকল ব্যবহারিক বা হাতে কলমে শিক্ষা গ্রহনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা চার বছর মেয়াদী কোর্ষ শেষ হওয়ার পর বিভিন্ন শিল্প-কারখানায় উপসহকারী প্রকৌশলী হিসাবে নিয়োগ প্রাপ্ত হন এবং ঐ সকল শিক্ষার্থী তাদের কারিগরি শিক্ষার বাস্তব প্রয়োগের মাধ্যমে শিল্পের ব্যাপক উন্নতি সাধিত করে থাকে।এর ফলে শিল্প-কারখানা গুলো আর্থিকভাবে লাভবান হয়।অন্যদিকে দেশের অর্থনৈতিক উন্নতি সাধিত হয়।এছাড়া কেউ যদি মনে করে যে,সে অন্যের অধীনে চাকরি না করে নিজেই কিছু করবে,সে ক্ষেত্রে একজন শিক্ষার্থী-এই কারিগরি শিক্ষা গ্রহনের মাধ্যমে স্বল্প কিছু মেশিণ সংগ্রহের মাধ্যমে নিজেই ছোটখাটো ওয়ার্কশপ দিতে পারে এবং এই ওয়ার্কশপে নিজের কারিগরি শিক্ষার বাস্তব প্রয়োগ করে বিভিন্ন গ্রাহকের চাহিদা মেটানোর মাধ্যমে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়া যায়। যেহেতু ওয়ার্কশপের মালিক একজন হওয়ায় ওয়ার্কশপে কাজের সকল উপার্জিত অর্থ মালিক নিজেই ভোগ করতে পারে।এছাড়া মালিক ইচ্ছ করলে কিছু কর্মী নিয়োগের মাধ্যমে তার কর্মের পরিধি বাড়াতে পারে। ফলে কিছু লোকের কর্ম সংস্থানের সৃষ্টি হয় এবং সেই সাথে কিছু মানুষের আয়ের পথ সৃষ্টি হয়।তাই অবশেষে বলা যায় কারিগরি শিক্ষার অধীনে মেকানিক্যাল বিভাগ দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য ব্যাপকভাবে ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে।

 

Mechanical Engineering এর কর্মক্ষেত্র সমূহ
• দেশের বৃহত্তম সরকারী প্রতিষ্ঠানঃ Roads and Highway Department (R & HD), Public Work Department (PWD), LGED, BADC ইত্যাদিতে Sub Assistant Engineer পদে চাকরির সুযোগ রয়েছে
• দেশের বৃহত্তম অন্যান্য সরকারি নিয়ন্ত্রণাধীন প্রতিষ্ঠান যেমন- পরমানু শক্তি কমিশন, Water Development Board (WDB), Power Development Board(PDB), DESCO, BRTC, PGCB, WASA, বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ পাট উন্নয়ন বোর্ড, বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন ও বিভিন্ন গ্যাস ফিল্ড ইত্যাদিতে Sub Assistant Engineer পদে চাকরির সুযোগ রয়েছে
• দেশের বিভিন্ন Textile Sector, Medical Instrument, TV Channel, Garments Industry, Automobile Company, ওষুধ কোম্পানী, সিমেন্ট ও রড কোম্পানী ও যে কোন ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফ্যাক্টরীতে চাকরির সুযোগ রয়েছে
• এছাড়াও সরকারি বেসরকারি সকল স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, এসএসসি ভোকেশনাল পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের জুনিয়র ইন্সট্রাক্টর পদে চাকরির সুযোগ রয়েছে
• দেশের বাইরে কর্মসংস্থানের প্রচুর সুযোগ রয়েছে

 

উচ্চ শিক্ষার সুযোগ সমূহ
• বিএসসি ইন মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং
• ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের উচ্চ শিক্ষার জন্য পৃথক একটি বিশ্ববিদ্যালয় আছে। ডুয়েট, গাজীপুর।
• A.M.I.E কোর্সে ৪ (চার) বছরের বিএসসি ইন মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং সুযোগ আছে।

You are here  :